ছাত্রজনতার উপর হামলা পুলিশের গুলিতে আহত রিপনের মায়ের মামলার প্রস্তুতি
- আপলোড সময় : ৩১-০৮-২০২৪ ০৯:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩১-০৮-২০২৪ ০৯:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে এসে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে সুনামগঞ্জের রাজপথ। গত ৪ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীদের গুলি ও হামলায় আহত হন কয়েকশ আন্দোলনকারী ছাত্রজনতা। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জে হয়নি কোনও মামলা। ছাত্রদের নিপীড়নকারী অনেক সন্ত্রাসীই ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে। মামলা না হওয়ায় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করতে এসে গুরুতর আহত ছাত্রজনতা এবং তাদের স্বজনদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও যারপরনাই বিক্ষুব্ধ।
বিশ্বস্থ সূত্রমতে, গত ৪ আগস্টের ঘটনায় সুনামগঞ্জে কোনও মামলার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের কাছে যায় এই বার্তাটি। তাদের পরামর্শে এবং স্থানীয় সংগঠকদের সহযোগিতায় অবশেষে মামলার উদ্যোগ নেন পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত আন্দোলনকারী রিপনের মা আছর বিবি। সন্তানকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেখে ন্যায় বিচারের আশায় মামলা করতে সুনামগঞ্জ আসেন তিনি। উল্লেখ্য, শনিবার রিপনের পায়ের মেজর অপারেশন হওয়ার কথা।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ৫ পৃষ্ঠার লিখিত একটি এজাহারসহ মামলা দায়েরর জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় যান আহত রিপনের মা। কিন্তু মামলায় পুলিশের কর্মকর্তারা আসামি থাকায় মামলাটি আদালতে দাখিল করতে অনুরোধ করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ। তিনি এ সময় জানান, এ জাতীয় মামলাগুলো থানায় রেকর্ড না করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জারি করা একটি সার্কুলারের কারণে মামলাটি রেকর্ড করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও শিক্ষার্থীরা মামলাটি থানায় রেকর্ড করতে পুলিশকে বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গ্রীণ সিগনাল না পেয়ে মামলাটি থানায় রেকর্ড হয়নি। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা আরো তথ্য উপাত্ত যোগাড় করে আসামির কলেবর বাড়িয়ে রবিবার আদালতে মামলাটি দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাত ১২ টার দিকে থানা এলাকা ত্যাগ করেন।
সূত্র জানায়, দায়ের করা মামলায় রিপনের পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে আহত করার নৃশংস ঘটনায় জড়িত এএসপি, ওসি ও এসআই পদমর্যাদার তিন পুুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রজনতার উপর হামলার হুমুকদাতা হিসেবে হাসিনা আমলের জেলার প্রায় সকল জনপ্রতিনিধি এবং জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের সকল নেতাদের আসামি করা হয়েছে। সেইসাথে হামলায় বৈধ ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ছাত্র-জনতাকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতদেরও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলার শীর্ষ পর্যায়ের সকল নেতা আসামির তালিকায় রয়েছেন।
সূত্রমতে, পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ মামলার এজাহারে শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে আরো ৪ থেকে ৫ শ জনকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক বারী, ইয়াকুব, গণী, সাইমন প্রমুখ জানান, থানায় মামলা না নেওয়ায় আগামী রবিবার মামলাটি আদালতে দায়ের করা হবে। নামাঙ্কিত আসামিদের কলেবর আরো বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে আমাদের। আমরা দ্রুত বিচার আইন ও বিষ্ফোরক আইনে মামলাটি রেকর্ডের জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে প্রার্থনা করব।
তারা আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা আন্দোলন করতে এসে আহত প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াব। তাদেরকে আইনি সহায়তা দিব। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আইনজীবীদের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ